,

ব্রহ্মপুত্রের বালু লুটে নিচ্ছে প্রভাবশালীরা

জেলা প্রতিনিধি, কিশোরগঞ্জ: কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় লাঠির জোরে কৃষকদের জিম্মি করে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের লাখ লাখ টাকার বালু নিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা।

অভিযোগ রয়েছে, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এবং প্রশাসনের যোগসাজশে নদ খনন করে তীরে কৃষকের নিচু জমিতে রাখা বালু লুট করে বিক্রি করছে একটি গোষ্ঠী। বাধা দিতে গিয়ে প্রভাবশালীদের হুমকির মুখে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে অনেককে। তবে উপজেলা প্রশাসন বলছে, বালু লুটকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

জানা গেছে, পাকুন্দিয়া উপজেলার মধ্যদিয়ে প্রবাহিত মৃতপ্রায় ব্রহ্মপুত্র নদ খনন করা হচ্ছে। বিআইডব্লিউটিএ’র স্থানীয় দু’জন ঠিকাদারের মাধ্যমে এ নদ খনন করে দুই তীরে কৃষকদের নিচু জমিতে বালু ফেলা হচ্ছে।

স্থানীয় ব্যবসায়ী আসাদুজ্জামান আসাদ ও তার লোকজন কৃষকদের জমিতে স্তূপ করে রাখা ওই বালু ট্রাক দিয়ে বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে দিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। গত ১৯ এপ্রিল এগারসিন্দুর ইউনিয়নের বাহাদিয়া এলাকায় আসাদুজ্জামানের ঘনিষ্ঠ আলমগীর হোসেন ট্রাকে করে কৃষক জামালের জমি থেকে বালু নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে বাধা দেয় স্থানীয়রা। এ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে একটি বালু বোঝাই ট্রাক জব্দ করে।

এ ঘটনার পর থেকে বাহাদিয়া এলাকায় দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এগারসিন্ধুর এলাকার কৃষক জামাল মিয়া, রমজান আলী, কাইয়ুম ও জামানসহ বেশ কয়েকজন কৃষক অভিযোগ করেন, অবৈধভাবে বালু নিতে বাধা দেয়ায় আসাদ ডিলারের লোকজন তাদের নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। হামলার ভয়ে অনেকে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আসাদুজ্জামান আসাদ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, একটি মসজিদের জন্য ট্রাকে করে বালু নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন আলমগীর। এ সময় কয়েকজন কৃষক বাধা দিলে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। তার দাবি আলমগীরের লোকজনের সঙ্গে খনন কাজের ঠিকাদার বিল্লালের লোকজনের ঝগড়া হয়। এতে তার কোনো সম্পৃত্ততা নেই।

পাকুন্দিয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) এ কে এম লুৎফর রহমানের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, বন্যার পানি থেকে রক্ষার জন্য দুই তীরের কৃষকদের নিচু জমিতে নদ খননের বালু ফেলা হচ্ছে। কিন্তু একটি অসাধু চক্র সেখান থেকে অবৈধভাবে বালু বিক্রির চেষ্টা করছে। এ নিয়ে আসাদ ডিলার ও বিল্লালের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। খবর পেয়ে তিনি (ইউএনও) পুলিশসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে বালু বোঝাই একটি ট্রাক জব্দ করেন।

তবে মালিক পাওয়া না যাওয়ায় কাউকে শাস্তি দেয়া যায়নি বলেও জানান তিনি। বালু লুটের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।

এই বিভাগের আরও খবর